বগুড়ায় মরিচ চাষে স্বাবলম্বী কৃষক
আবদুল ওহাব (বগুড়া প্রতিনিধি)
“হামরা বোগড়্যার ছোল, পুটি মাছ ম্যারব্যার য্যায়্যা ম্যার্যা আনি বোল, হামরা বোগড়্যার ছোল”। শুধু মাছ ধরতে নয়। কর্ম দক্ষতার এ প্রবাদটির মতো ফসল উৎপাদনেও বগুড়ার কৃষক শীর্ষে। তাই বগুড়ার মরিচ বাংলাদেশের সেরা ও নামকরা।
বগুড়ার মরিচের ঝাল, গন্ধ, স্বাদ ও গুণগত মান ঐতিহ্যের দাবীদার। এ মরিচের নাম শুনলে বাংলাদেশের যে কোন জেলার চাকুরীজীবি, শ্রমজীবি, পেশাজীবি ও সাধারন মানুষ সুনামের সাথে পণ্যটি ক্রয় করতে উৎসাহ প্রকাশ করেন।
তাই তো যুগের পর যুগ অতিবাহিত হলেও আজও বগুড়ার মরিচ প্রসিদ্ধ হয়ে আছে এ এলাকার কৃষান-কৃষাণীর ঘাম আর অক্লান্ত পরিশ্রমে। শুধু তাই নয়, ফলন ও লাভ ভাল হওয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও বগুড়ার কৃষান-কৃষাণীর মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। ধারাবাহিকভাবে এ বছরেও বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলায় চলতি মৌসুমে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে।
জেলা কৃষি কর্মকর্তার অফিস সুত্রে জানা গেছে, মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে মরিচ চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা এখন পাকা টোবা লাল মরিচ উত্তোলন করছে। কেউবা রোদে শুকাতে শুরু করেছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দী উপজেলার চন্দনবাইসা, কাজলা চালুয়াবাড়ী, কর্ণিবাড়ী, বোহাইল হাটশেরপুর, কুতুবপুর ও চরাঞ্চলে মরিচের এ বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও মরিচের ব্যাপক চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা মরিচের প্রকারভেদে প্রতিমণ ৫/৬ হাজার টাকা দরে বিক্রি করছে। পাইকাররা এসব প্রসিদ্ধ মরিচ ক্রয় করে ঢাকা, চট্রগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, নোয়াখালী, যশোর, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নিয়ে যাচ্ছে।
এসব এলাকার মরিচ চাষীরা আমাদের জানান, প্রতি বিঘায় কৃষান, সার, চাষ ও বীজ বাবদে খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘা জমিতে উৎপন্ন হয়েছে প্রায় ৫ থেকে ৬ মণ মরিচ। এতে করে প্রতি বিঘা জমিতে আয় ও লাভ হচ্ছে ১২ থেকে ২০ হাজার টাকা। বোহাইল ইউনিয়নের কৃষক সামছুল আলম জানান, তিনি চলতি মৌসুমে ৭ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করে ৩০ মণ শুকনো মরিচ পেয়েছেন। এখন এই মরিচ তিনি দেড় লক্ষ টাকা বিক্রি করবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন।
মরিচের এই ফলন ও লাভ দেখে মরিচ চাষী এসব কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। সেই সাথে এলাকায় অনেক কৃষক এ ধরনের কৃষিপণ্য উৎপন্ন করতে উৎসাহী হয়ে উঠছেন।
#লাইক ও শেয়ার দিয়ে প্রতিক্ষণের সাথে থাকুন।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি